জিলহজের প্রথম দশ দিনের ফজিলত ও মুস্তাহাব আমল মাওলানা এ এইচ এম আবুল কালাম আযাদ

জিলহজের প্রথম দশ দিনের ফজিলত ও মুস্তাহাব আমল
মাওলানা এ এইচ এম আবুল কালাম আযাদ

| আগস্ট ২৩, ২০১৭ - ১:০৪ অপরাহ্ণ

আল্লাহ তা‘আলা দয়ালু। তাই তিনি আপন বান্দাদের তওবার সুযোগ দিতে ভালোবাসেন। তিনি চান বান্দারা ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য লাভ করুক। এ উদ্দেশ্যে তিনি আমাদের জন্য বছরে কিছু বরকতময় ও কল্যাণবাহী দিন রেখেছেন- যাতে আমলের সওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। আমরা পরীক্ষার দিনগুলোতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাই সবচেয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করার জন্য। তবে কেন আখেরাতের জন্য এসব পরীক্ষার দিনগুলোতেও সর্বাধিক প্রচেস্টা ব্যয় করব না? এ দিন গুলোতে আমল করা তো বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি নেকী ও কল্যাণ বয়ে আনে। এমন দিন গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যিলহজ মাসের এই প্রথম দশদিন। এ দিনগুলো এমন রাসূলুল্লাহ স. যেগুলোকে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাতে আমলের প্রতি তিনি সবিশেষ উদ্বুদ্ধ করেছেন। এ দিন গুলোর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে শুধু এতটুকুই যথেষ্ট যে আল্লাহ তা‘আলা এর কসম করেছেন।
জিলহজের প্রথম দশ দিনের ফজিলত : আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ যে, তিনি নেক বান্দাদেরকে এমন কিছু মৌসুম দিয়েছেন যেগুলোতে তারা বেশি বেশি নেকীর কাজ করতে পারে। এই মৌসুমগুলোর অন্যতম হল, যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন। এ দিনগুলোর ফজিলতের ব্যাপারে কুরআন-সুন্নায় অনেক দলীল রয়েছে:
১. আল্লাহ তায়ালা বলেন: “শপথ ফজরের। শপথ দশ রাতের। (সূরা ফজর: ১ ও ২) ইবনে কাসীর রাহ. বলেছেন: “এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন।” এই মত ব্যক্ত করেন ইবনে আব্বাস, ইবনুয যুবাইর, মুজাহিদ প্রমুখ। (সহীহ বুখারী)
২. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল স. বলেছেন: “যিলহজ্জের প্রথম দশকের চেয়ে উত্তম এমন কোন দিন নেই, যে দিনগুলোর সৎ আমল আল্লাহ্র নিকট অধিক পছন্দনীয়।” সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন: আল্লাহ্র পথে জিহাদও নয় হে রাসূলুল্লাহ্ স. তিনি বললেন: “আল্লাহ্র পথে জিহাদও নয়। অবশ্য সেই মুজাহিদের কথা ভিন্ন, যে জান-মাল নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে পড়ে, কিন্তু আর কোন কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না (অর্থাৎ আল্লাহর পথে শহীদ হয়ে যায়)।” (বুখারী)
৩. আল্লাহ তায়ালা বলেন: “তারা যেন নির্দিষ্ট দিন সমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করে। (সূরা হজ্জ: ২৮) ইবনে আব্বাস রা. বলেছেন: “(নির্দিষ্ট দিন সমূহ হল) যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন।” (তাফসীর ইবনে কাসীর)
৪. ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ স. বলেছেন, “এ দশ দিনের তুলনায় অন্য কোন সময় আল্লাহর নিকট এতটা মর্যাদা পূর্ণ নয় বা তাতে আমল করা এতটা পছন্দনীয় নয়। সুতরাং এ দিনগুলোতে তোমরা অধিক পরিমাণ তাহলীল (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবীর (আল্লাহু আকবার) ও তাহমীদ (আল হামদুলিল্লাহ) পাঠ কর।” (মুসনাদ আহমদ)
৫. সাঈদ ইবনে জুবাইর (যিনি পূর্বোক্ত ইবনে আব্বাস রা. এর হাদীস বর্ণনাকারী) জিলহজ্জের দশ দিন শুরু হলে ইবাদত-বন্দেগীতে এত বেশী পরিশ্রম করতেন যে, অন্য কারো জন্য এত ইবাদত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যেত। (দারেমী)
৬) ইবনে হাজার রহ. ফাতহুল বারীতে বলেন: “এই দশ দিন বিশেষ বৈশিষ্ট্য মন্ডিত হওয়ার কারণ হিসেবে আমার নিকট এটাই প্রতিভাত হচ্ছে যে, এ দিনগুলোতে সালাত, সিয়াম, দান-সদকা, হজ্জ ইত্যাদি মৌলিক ইবাদতগুলোর সমাবেশ ঘটেছে। এ ছাড়া অন্য কখনো এগুলো একসাথে পাওয়া যায় না।
এ হাদীসগুলোর মর্ম হল, বছরে যতগুলো মর্যাদাপূর্ণ দিন আছে তার মধ্যে এ দশ দিনের প্রতিটি দিনই সর্বোত্তম। রাসূলুল্লাহ স. এ দিনসমূহে নেক আমল করার জন্য তাঁর উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন। তাঁর এ উৎসাহ প্রদান এ সময়টার ফযীলত প্রমাণ করে। রাসূলুল্লাহ স. এ দিনগুলোতে বেশি বেশি করে তাহলীল ও তাকবীর পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন ওপরে ইবন উমর রা. বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ হয়েছে।
ইবন রজব রহিমাহুল্লাহ বলেন, উপরোক্ত হাদীসগুলো থেকে বুঝা যায়, নেক আমলের মৌসুম হিসেবে যিলহজ মাসের প্রথম দশক হল সর্বোত্তম, এ দিবসগুলোয় সম্পাদিত নেক আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। হাদীসের কোনো কোনো বর্ণনায় (‘আহাব্বু’ তথা সর্বাধিক প্রিয়) শব্দ এসেছে আবার কোনো কোনো বর্ণনায় (‘আফযালু’ তথা সর্বোত্তম) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। অতএব এ সময়ে নেক আমল করা বছরের অন্য যে কোনো সময়ে নেক আমল করার থেকে বেশি মর্যাদা ও ফযীলতপূর্ণ। এজন্য উম্মতের অগ্রবর্তী পুণ্যবান মুসলিমগণ এ সময়গুলোতে অধিকহারে ইবাদতে মনোনিবেশ করতেন। যেমন আবূ ছিমান নাহদী বলেন,‘তাঁরা তথা পূর্বসূরীগণ তিনটি দশককে অনেক বেশি মর্যাদাবান জ্ঞান করতেন : রমযানের শেষ দশক, যিলহজের প্রথম দশক এবং মুহাররমের প্রথম দশক।’
জিলহজের প্রথম দশ দিন বছরের শ্রেষ্ঠ দশ দিন হওয়ার কারণ:
১. আল্লাহ তা‘আলা এর কসম করেছেন : আল্লাহ তা‘আলা যখন কোনো কিছুর কসম করেন তা কেবল তার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদাই প্রমাণ করে। কারণ, মহা সত্তা শুধু মহা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরই কসম করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কসম ভোরবেলার। কসম দশ রাতের।’ (সূরা আল-ফাজর: ১-২) আয়াতে ‘কসম দশ রাতের’ বলে যিলহজের দশকের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। এটিই সকল মুফাসসিরের মত। ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন, এ মতটিই সঠিক।
২ এসবই সেই দিন আল্লাহ যাতে তাঁর জিকিরের প্রবর্তন করেছেন : আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন, ‘যেন তারা নিজদের কল্যাণের স্থানসমূহে হাযির হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু থেকে যে রিজিক দিয়েছেন তার ওপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’ (সূরা আল-হজ: ২৮) জমহুর উলামার মতে, আয়াতে নির্দিষ্ট দিনসমূহ বলে যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনকে বুঝানো হয়েছে। এটিই ইবন উমর ও ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুমার মত।
৩. রাসূলুল্লাহ স. দিনগুলোকে শ্রেষ্ঠ দিন বলে আখ্যায়িত করেছেন: যিলহজের এই দিনগুলোকে রাসূলুল্লাহ স. দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন জাবির রা. থেকে বর্ণিত, ‘পৃথিবীর দিনগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলো হলো দশকের দিনসমূহ। অর্থাৎ যিলহজের (প্রথম) দশদিন। জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর পথে জিহাদেও কি এর চেয়ে উত্তম দিন নেই? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদেও এর চেয়ে উত্তম দিন নেই। হ্যা, কেবল সেই যে (জিহাদে) তার চেহারাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।’ (মুসনাদ বাযযার : ১১২৮; মুসনাদ আবী ই‘আলা : ২০৯০)
৪. এই দিনগুলোর মধ্যে রয়েছে আরাফার দিন: আরাফার দিন হলো বড় হজের দিন। এটি ক্ষমা ও মাগফিরাতের দিন। জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নাজাতের দিন। যিলহজের এই দশকে যদি ফযীলতের আর কিছু না থাকত তবে এ দিবসটিই তার মর্যাদার জন্য যথেষ্ট হত। এ দিনের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ স. বলেন, ‘আরাফা দিবসই হজ’। (তিরমিযী : ৮৯৩; নাসায়ী : ৩০১৬)
৫. এতে রয়েছে কুরবানীর দিন: কোনো কোনো আলিমের মতে কুরবানীর দিনটি বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন। রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর কাছে সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ দিন হলো কুরবানীর দিন অতপর স্থিরতার দিন’। (অর্থাৎ কুরবানীর পরবর্তী দিন। কারণ, যেদিন মানুষ কুরবানী ইত্যাদির দায়িত্ব পালন শেষ করে সুস্থির হয়।) (নাসায়ী: ১০৫১২; ইবন খুযাইমা, সহীহ : ২৮৬)
৬. এ দিনগুলোতে মৌলিক ইবাদতগুলোর সমাবেশ ঘটে: হাফেয ইবন হাজর রহিমাহুল্লাহ তদীয় ফাতহুল বারী গ্রন্থে বলেন, ‘যিলহজের দশকের বৈশিষ্ট্যের কারণ প্রতিয়মান হয় তা হলো, এতে সকল মৌলিক ইবাদতের সন্নিবেশ ঘটে। যথা : সালাত, সিয়াম, সাদাকা, হজ ইত্যাদি। অন্য কোনো দিন এতগুলো ইবাদতের সমাবেশ ঘটে না।’ (ফাতহুল বারী : ২/৪৬০)
জিলহজের প্রথম দশ দিনের মুস্তাহাব আমল:
প্রতিটি মুসলিমের উচিৎ ইবাদতের মৌসুমগুলোকে সুন্দর প্রস্তুতির মাধ্যমে স্বাগত জানানো। যিলহজ মাসকে আমরা স্বাগত জানাতে পারি নিচের কাজগুলোর মধ্য দিয়ে: এ দশ দিন যে আমলগুলো বেশি বেশি করা উচিৎঃ
১. এই দশটি দিন কাজে লাগাতে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা: শুরুতেই যা করা সবার উচিৎ তা হল, এই দিনগুলোকে পুণ্যময় কাজ ও কথায় সুশোভিত করার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করা। যে ব্যক্তি কোনো কাজের সংকল্প করে আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন। তার জন্য সাহায্যকারী উপায় ও উপকরণ প্রস্তুত করে দেন। যে আল্লাহর সঙ্গে সত্যবাদিতা দেখায় আল্লাহ তাকে সততা ও সফলতায় ভূষিত করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথেই আছেন।’ (সূরা আল-আ‘নকাবূত: ৬৯)
২. সালাত: ফরয সালাতগুলো যথাসময়ে সম্পাদন করার পাশাপাশি প্রচুর নফল সালাত আদায় করা। কারণ, সালাতই হল আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়। সাওবান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ স. কে বলতে শুনেছি: “তুমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে অধিক পরিমাণ সেজদা কর (নফল সালাত আদায় কর), কারণ যখনই তুমি সেজদা কর বিনিময় আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং গুনাহ মোচন করেন।” (মুসলিম) এটি কেবল যিলহজ্জ মাস নয় বরং অন্য সকল সময়ের জন্য প্রযোজ্য।
৩.সিয়াম: রোজা রাখা অন্যতম একটি নেক কাজ। তাই এ দিনগুলোতে নফল রোজা রাখা খুবই ফযীলতের। হুনাইদা বিন খালেদ তার স্ত্রী থেকে, তিনি রাসূলুল্লাহ স. এর জনৈক স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন: “রাসূলুল্লাহ স. যিলহজ্জ মাসের নয় তারিখ, আশুরার দিন ও প্রত্যেক মাসের তিন দিন রোজা পালন করতেন।” (আহমদ, আবু দাউদ ও নাসায়ী) ইমাম নববী যিলহজ্জ মাসের শেষ দশ দিনে রোযা রাখার ব্যাপারে বলেছেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মুস্তাহাব ।
৪. আরাফার দিন রোজা: আরাফার দিন রোজা রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু রাসূলুল্লাহ স. থেকে প্রমাণিত, তিনি আরাফার দিনের রোজার ব্যাপারে বলেছেন: “আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, এটি পূর্ববর্তী এক বছর ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হবে।” (মুসলিম) তবে আরাফায় অবস্থানকারী হাজীদের জন্য রোযা রাখা মুস্তাহাব নয়। কারণ, নবী স. আরাফায় অবস্থান করেছিলেন রোজা বিহীন অবস্থায়।
৫. হজ ও উমরা সম্পাদন করা: হজ ও উমরা এ দুটি হলো এ দশকের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। যারা এ দিনগুলোতে হজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন তারা যে অনেক ভাগ্যবান তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আল্লাহ যাকে তাঁর নির্দেশিত এবং রাসূলুল্লাহ স. প্রদর্শিত পন্থায় হজ বা উমরা করার তাওফীক দান করেন তার পুরস্কার শুধুই জান্নাত। কারণ, আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. বলেন, ‘এক উমরা থেকে আরেক উমরা এতদুভয়ের মাঝের গুনাহগুলোর কাফফারা এবং মাবরূর হজের প্রতিদান কেবলই জান্নাত।’ (বুখারী: ১৭৭৩; মুসলিম: ৩৩৫৫) আর মাবরূর হজ সেটি যা পরিপূর্ণভাবে সম্পাদিত হয় রাসূলুল্লাহ স. প্রদর্শিত পন্থায়। যাতে কোনো রিয়া বা লোক দেখানো কিংবা সুনাম বা মানুষের প্রশংসা কুড়ানোর মানসিকতা নেই। নেই কোনো অশ্লীলতা বা পাপাচারের স্পর্শ। যাকে বেষ্টন করে থাকে নেক কাজ ও পুণ্যময় আমল।
৬. দান-সাদাকা করা: এ দিনগুলোতে যে আমলগুলো বেশি বেশি দরকার তার মধ্যে অন্যতম হলো সাদাকা। আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সাদাকা দিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে: ‘হে মুমিনগণ, আমি তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তা হতে ব্যয় কর, সে দিন আসার পূর্বে, যে দিন থাকবে না কোনো বেচাকেনা, না কোনো বন্ধুত্ব এবং না কোনো সুপারিশ। আর কাফিররাই যালিম।’ (সূরা আল-বাকারা: ২৫৪)
আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. বলেন, ‘সাদাকা সম্পদকে কমায় না, ক্ষমার মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং কেউ আল্লাহর জন্য বিনয়ী হলে আল্লাহ তাকে উঁচু করেন।’ (মুসলিম: ৬৭৫৭)
৭. তাকবীর, তাহমীদ ও তাসবীহ পড়া: এসব দিনে তাকবীর (আল্লাহু আকবার), তাহমীদ (আলহামদু লিল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাসবীহ (সুবহানল্লাহ) পড়া সুন্নত। এ দিনগুলোয় যিকর-আযকারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবন উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. বলেন, ‘এ দশ দিনে নেক আমল করার চেয়ে আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় ও মহান কোনো আমল নেই। তাই তোমরা এ সময়ে তাহলীল (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবীর (আল্লাহু আকবার) ও তাহমীদ (আল-হামদুলিল্লাহ) বেশি বেশি করে পড়।’ (বায়হাকী, শুআবুল ঈমান: ৩৪৭৪; মুসনাদ আবী আওয়ানা: ৩০২৪)
তাকবীরের শব্দগুলো নিম্নরূপ : (আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।) উল্লেখ্য, বর্তমানে তাকবীর হয়ে পড়েছে একটি পরিত্যাক্ত ও বিলুপ্তপ্রায় সুন্নত। আমাদের সকলের কর্তব্য এ সুন্নতের পুনর্জীবনের লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত ব্যাপক প্রচারণা চালানো। হাদীসে উল্লিখিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আমার সুন্নতসমূহ থেকে একটি সুন্নত পুনর্জীবিত করল, যা আমার পর বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তাকে সে পরিমাণ সওয়াব দেওয়া হবে, যে পরিমাণ তার ওপর (সে সুন্নতের ওপর) আমল করা হয়েছে। এতে (আমলকারীদের) সওয়াব হতে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না।’ (তিরমিযী: ৬৭৭)
যিলহজ মাসের সূচনা থেকে আইয়ামে তাশরীক শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ তাকবীর পাঠ করা সকলের জন্য ব্যাপকভাবে মুস্তাহাব। তবে বিশেষভাবে আরাফা দিবসের ফজরের পর থেকে মিনার দিনগুলোর শেষ পর্যন্ত অর্থাৎ যেদিন মিনায় পাথর নিক্ষেপ শেষ করবে সেদিন আসর পর্যন্ত প্রত্যেক সালাতের পর এ তাকবীর পাঠ করার জন্য বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ ও আলী রাদিআল্লাহু আনহুমা থেকে এ মতটি বর্ণিত। ইবন তাইমিয়া রহ. একে সবচেয়ে বিশুদ্ধ মত বলেছেন। উল্লেখ্য, যদি কোনো ব্যক্তি ইহরাম বাঁধে, তবে সে তালবিয়ার সাথে মাঝে মাঝে তকবীরও পাঠ করবে। হাদীস দ্বারা এ বিষয়টি প্রমাণিত। (ইবন তাইমিয়াহ, মজমু‘ ফাতাওয়া : ২৪/২২০)
৮. পশু কুরবানী করা: এ দিনগুলোর দশম দিন সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য কুরবানী করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর নবীকে কুরবানী করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুন ও কুরবানী করুন।’ (সূরা আল-কাউসার: ০২)
এই দশদিনের অন্যতম সেরা প্রিয় আমল হলো কুরবানী। কুরবানীর পশু জবাই ও গরিবদের মধ্যে এর গোশত বিতরণের মাধ্যমে আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য লাভ হয়। এর দ্বারা গরিবদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ পায় এবং তাদের কল্যাণ সাধন হয়।
৯. গুনাহ থেকে দূরত্ব অবলম্বন করা: সৎ কর্মের মাধ্যমে যেমন আল্লাহর নৈকট্য অর্জিত হয়, গুনাহের কাজের মাধ্যমে তেমন আল্লাহ থেকে আল্লাহর রহমত ও করুণা থেকে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মানুষ তার নিজের করা অপরাধের কারণে কখনো আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়। তাই আমরা যদি অপরাধ মার্জনা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির প্রত্যাশী হই, তাহলে এ দিনগুলোতে এবং এর শিক্ষা কাজে লাগিয়ে বছরের অন্য দিনগুলোতে গুনাহ পরিত্যাগ করতে হবে। কেউ যখন জানতে পারেন কী বড় অর্জনই না তার জন্য অপেক্ষা করছে, তার জন্য কিন্তু যে কোনো কষ্ট সহ্য করা সহজ হয়ে যায়।
১০. একনিষ্ঠ মনে তওবা করা: তওবার অর্থ প্রত্যাবর্তন করা বা ফিরে আসা। যে সব কথা ও কাজ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অপছন্দ করেন তা বর্জন করে যেসব কথা ও কাজ তিনি পছন্দ করেন তার দিকে ফিরে আসা। সাথে সাথে অতীতে এ ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে অন্তর থেকে অনুতাপ ও অনুশোচনা ব্যক্ত করা। যিলহজের শুভাগমনের আগে সবচে বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার এ তওবা তথা সকল গুনাহ থেকে ফিরে আসার প্রতি। স্বার্থক তওবা সেটি যার মধ্যে তিনটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। যথা- প্রথম. গুনাহটি সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা। দ্বিতীয়. গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। এবং তৃতীয়. এই গুনাহটি ভবিষ্যতে না করার সংকল্প করা।
“বাস্তবেই এটি তওবার সুবর্ণ সময়। দয়াময় খোদা এ সময় বেশি বেশি তওবার তাওফীক দেন এবং অধিক পরিমাণে বান্দার তওবা কবুল করেন। তিনি ইরশাদ করেন, ‘তবে যে তাওবা করেছিল, ঈমান এনেছিল এবং সৎকর্ম করেছিল, আশা করা যায় সে সাফল্য অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (কাসাস: ৬৭)
“তিনি আরও ইরশাদ করেন, ‘বল, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (যুমার : ৫)
উপসংহার: প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, এই সকল অমূল্য সুযোগগুলো ফুরিয়ে যাওয়ার পূর্বেই তা গ্রহণ করুন। কারণ, সময় পার হয়ে গেলে তখন আফসোস করে লাভ হবে না। মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করি, তিনি যেন আমাকে ও আপনাকে এই কল্যাণের মৌসুমগুলোকে অমূল্য সম্পদ হিসেবে গ্রহণ করার তাওফীক দান করেন এবং তাতে ভালোভাবে তাঁর ইবাদত-বন্দেগী সম্পাদনে সাহায্য করেন। আমীন।।
লেখক:
সভাপতি- বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসসির পরিষদ, টাঙ্গাইল জেলা।


ফেসবুকের দংশন থেকে সাবধান!

ফেসবুকের দংশন থেকে সাবধান!

২৩ আগস্ট ২০১৭, ১১:৩২




কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে অয়ন। বছর দেড়েক পরই গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা, যে পরীক্ষার ওপর নির্ভর করছে তার জীবনের মোড়। কিন্তু পাঠে মন নেই অয়নের।

অয়নের একটি মুঠোফোন আছে। গত জন্মদিনে অনেক কসরত করে মায়ের কাছ থেকে বাগিয়েছে। স্মার্টফোন! এটা ওর কাছে আলাদিনের চেরাগের চেয়েও দামি। আলাদিনের চেরাগে তো ঘষা লাগে, এটায় তা-ও লাগে না। মসৃণ পৃষ্ঠদেশে আলতো পরশ বোলালেই বিরাট জাদুর দুনিয়া খুলে যায়। এর নাম ফেসবুক। কলেজের টেক্সট বুক শিকেয় তুলে আপাতত এই ফেসবুক নিয়েই দিন কাটছে তার।

অয়নের শয়নে-স্বপনে এখন ফেসবুক। সকালে ঘুম থেকে উঠলেই বুকের ভেতর ফেসবুক মায়াপুরীর জাদুকাঠির মতো নাচে। ‘আয় আয়, সোনা জাদু’ বলে হাতছানি দেয়। এ ডাকে অয়ন পাগলপারা। সুযোগ খোঁজে কখন বড়দের নজর এড়িয়ে করতলে আনা যাবে সেই জাদুর যন্ত্র। দেওয়া যাবে স্ট্যাটাস, পোস্ট করা যাবে নিজেরই নায়কের মতো পোজ দেওয়া ছবি, আর পাওয়া যাবে লাইক। বন্ধু তালিকায় কয়েকজন মেয়েও আছে, যাদের সঙ্গে চ্যাট করার মজাই আলাদা! কিন্তু দুরবিনের মতো চোখ বিঁধিয়ে রাখা মুরব্বিদের জ্বালায় সে সুযোগ কি আর জোটে?

এ ভাবনায় অয়নের ধরণি উতলা। মা কী বলছেন, কানে যাচ্ছে না। আর বাবা তো এখন শত্রু। খালি পড়তে বলেন। ফেসবুকের ওপর কোনো ‘বুক’ আছে নাকি? আর স্কুলের শিক্ষকেরা কী যে ছাই বক বক করেন, কানে যেন পোকা মারার তরল বিষ ঢালেন! স্যাররা তো আর বোঝেন না—ফেসবুক পাঠে কী যে মজা!

এই করে করে অয়নের পরীক্ষা এসে যায়। মা ভাবেন, ঘাড় গুঁজে বসে থেকে ছেলে তাঁর ঘণ্টার পর ঘণ্টা যে বিদ্যার্জন করেছে, পরীক্ষার হলে গিয়ে উগরে দিলে খাতা সয়লাব। বাবা ভাবেন, না, ছেলে এবার বোমার মতো নাম ফাটাবে। কিন্তু বইয়ের তলে মুঠোফোন রেখে ছেলে যে ফেসবুক মকশো করে পাঠের ঝোলা উজাড় করেছে, এর খোঁজ তো তাঁরা পাননি। সোনার ছেলে অয়নের এই যদি পাঠের অবস্থা, তবে পরিণতি কী? এ প্রশ্নের উত্তর সবারই জানা।

এতক্ষণ যে অয়নের কথা বললাম, এটা কাল্পনিক চরিত্র। তবে ঘটনা কিন্তু অবাস্তব নয়। এমন অয়নের বিচরণ এখন চারদিকে। স্মার্টফোনে মোহাবিষ্ট এসব অয়ন ইন্টারনেটের মায়াজাল আর ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগের প্যাঁচকলে আটকে শেষ হয়ে যাচ্ছে। শহর-বন্দর-গ্রাম—কোথাও এই আসক্তি কম নেই; বরং দিন দিন ব্যবহার বাড়ছে।

সম্প্রতি এক চক্ষু চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে এমন একটি ছেলের দেখা মিলেছে। ছেলেটি সামনে এসএসসি দেবে। তার সমস্যা, পড়তে বসলে মাথা ঘোরায়, চোখে ঝাপসা দেখে। ক্ষুধামান্দ্য আছে। সকালে দেরিতে নাশতা করে। এতে উদ্বিগ্ন মা-বাবা। তাঁরা দুজনই ছেলেটিকে নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসক চোখ পরীক্ষা করে কিছু না পেয়ে ছেলেটিকে উকিলের মতো জেরা শুরু করলেন। বেরিয়ে এল আসল ঘটনা। ছেলেটি রাত জেগে ইন্টারনেট ঘাঁটে। ফেসবুক নাড়াচাড়া করে। এতে তার প্রচুর প্রাণশক্তি খরচা হয়। অনেক রাত অবধি জেগে মায়ের তাগিদে ভোরে উঠতে হয় বলে দিনটা শুরুই হয় নিমতেতো আমেজে। মোটে একটা শরীর এত ধকল সইবে কেন? এ জন্য মাথা ঘোরানো আর চোখে ঝাপসা দেখার মতো উপসর্গের আবির্ভাব।

কিছু অভিভাবক আছেন, যাঁরা আগে থেকেই সচেতন। তাঁরা ছেলের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়ার বিপক্ষে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তই-বা কতটুকু ঠিক? অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যখন ঘরের ভেতর উপাদেয় খাবারের মতো সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে, এর স্বাদ নেওয়া থেকে ছেলে বা মেয়েকে কতক্ষণ বিরত রাখা যাবে? আবার সুযোগ দিলেও মরণ! এতে আসক্তি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি ষোলো আনা। আর আধুনিক প্রযুক্তি থেকে নতুন প্রজন্মকে দূরে ঠেলে রাখাও তো সমীচীন নয়। তবে কি আমরা ফেসবুককে গলা ফাটিয়ে গাল দেব? ফেসবুকওয়ালের গোষ্ঠী উদ্ধার করব?

করেইবা কী লাভ? অনেক ক্ষেত্রে অগ্রপথিক তো বড়রাই। এমন পরিবারও আছে, যেখানে মা-বাবা উভয়েই ফেসবুক ছাড়া চলতে পারেন না। বাবা ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুক খুলে দেখছেন দিনদুনিয়ার খবর। এর-ওর খোঁজ নিচ্ছেন। মা ফেসবুক খুলে ঘাঁটেন গৃহস্থালির নতুন গেজেট কী বেরোল, রান্নাবান্নার নতুন রেসিপি কী। মা-বাবার এই অবাধ তৎপরতায় তলে-তলে সন্তানও উৎসাহিত হয়।

এ কথা অস্বীকার করার জো নেই যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক খুবই ভালো। এর মাধ্যমে নতুন নতুন যোগাযোগ বাড়ে। চেনা-অচেনা অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। দুনিয়ার নানা প্রান্তের নানা খবর পাওয়া যায়। জানা যায় নতুন নতুন বিষয়। কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাবও তো কম নয়। বিশেষ করে কাঁচা মাথায় এর আসক্তি ভয়াবহ। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়?

এ ক্ষেত্রে সচেতনতা, সতর্কতার বিকল্প নেই। সাপ এমন এক প্রাণী, একটা শিশু জ্ঞান হওয়ার পর থেকে জানতে পারে—বুকে হাঁটা এই প্রাণীর বিষ আছে। সাপের ছোবলে অন্য প্রাণী মারা যায়। কাজেই সাপ নিয়ে একজন মানুষ শৈশব থেকেই সচেতন। সাপ ভয়ংকর ঠিকই, তবে তার উপকারিতাও কম নয়। সাপ কৃষিজমির পোকামাকড়-ইঁদুর খেয়ে কৃষকের ফসল রক্ষায় বিরাট উপকার করে। সাপের বিষ ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে। কিছু মানুষের উপাদেয় খাবারের তালিকায় রয়েছে সাপ। বেদে বা সাপুড়ে সম্প্রদায়ের রুটিরুজির মূলেই তো সাপ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও সাপের ভূমিকা কম নয়।

সে রকম ফেসবুকের ভালো জিনিসটা নিতে আমাদের তো কোনো সমস্যা নেই। উপকার আমরা যতটা পারি নেব। আর ক্ষতিকর দিক, যা বিষাক্ত দংশনের মতো সর্বনেশে, তা থেকে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সচেতন করতে হবে নতুন প্রজন্মকে। 

শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া: সাহিত্যিক, সাংবাদিক
sharifrari@gmail.com