অপ্রিয় একটি সত্যি,

অপ্রিয় একটি সত্যি,

  ___ অপ্রিয় একটি সত্যি, ____
https://mobile.facebook.com/alamgir.rahman.9847
https://papry99.blogspot.com/
:
.-- অপ্রিয় একটি সত্যি, বিবেকের তাড়নায় লিখতে বসলামঃ
বাচ্চা নষ্ট করার সব পদ্ধতিই এক ধরণের, লম্বা নল
জরায়ুতে ঢুকিয়ে গর্ভের শিশুটিকে প্রথমে ক্ষত-
বিক্ষত করা হয়। পরে ভ্যাকুয়াম সাকারের মাধ্যমে
শিশুটিকে শুষে আনা হয়।
গর্ভপাতের সময়কার শিশুটির অব্যাক্ত বেদনা কারো
কানে পৌঁছে না।
মানুষ নামের নরপশুর নির্মমতায় একটি নিষ্পাপ শিশু মৃত
মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়।
যেসব মা ক্ষণিকের সুখের জন্য নিজ গর্ভের
সন্তানকে পাশবিকভাবে হত্যা করে
তাদের জন্য হৃদয় উগড়ে দেয়া সীমাহীন ঘৃণা।
Abortion জিনিস টা কি???
একটু পড়ে দেখুন হৃদয়হীন মানুষের হৃদয়েও
কম্পনের সৃষ্টি হবার কথা
লেখাটা লিখতে গিয়ে কতবার যে হাত কেপেছে !
পড়ে দেখুন,নিজের বিবেকে নাড়া দেয় কি না !!??
প্রথম মাস**
হ্যালো মা.....!! কেমন আছো তুমি? জানো
আমিএখন মাত্র ৩-৪ইঞ্চি লম্বা!!
কিন্তু হাত-পা সবই আছে তোমার কথা শুনতে পাই,
ভালো লাগে শুনতে।
দ্বিতীয় মাস**
মা,আমি হাতের বুড়ো আঙ্গুল চুষা শিখেছি, তুমি
আমাকে দেখলে এখন বেবি বলবে বাইরে
আসার সময় এখনো হয়নি আমার,এখানেই উষ্ণ
অনুভব করি খুব।
তৃতীয় মাস**
মা তুমি কি জানো আমি যে একটা মেয়ে? পরী
পরী লাগবে আমাকে,আমাকে দেখলে তুমি
অনেক খুশি হবে,তুমি মাঝে মাঝে কাঁদো
কেনো মা?তুমি কাঁদলে আমারও কান্না পায়...
চতুর্থ মাস**
আমার মাথায় ছোট্ট ছোট্ট চুল গজিয়েছে মা, আমি
হাত-পা ভালো ভাবে নাড়াতে পারি, মাথা নাড়াতে পারি, http:/alamgir.rahman.9
847
https://papry99.blogspot.com
অনেক কিছুই করতে পারি।
পঞ্চম মাস**
মা তুমি ডক্টরের কাছে কেনো গিয়েছিলে? কি
বলেছে ডক্টর? আমি তার কথা শুনতে
পারিনি,তোমার কথা
ছাড়া আমি কারো কথা শুনতে পারিনা।
ষষ্ঠ মাস**
মা আমি অনেক ব্যথা পাচ্ছি মা, ডক্টর সুঁচের মতো
কি যেনো আমার শরীরে ঢুকাচ্ছে,ওদের
থামতে বলো মা আমি তোমাকে ছেড়ে কথাও
যাবোনা মা..
সপ্তম মাস**
মা কেমন আছো? আমি এখন স্বর্গে আছি,একটা
এন্জেল আমাকে নিয়ে এসেছে,
এন্জেল বলেছে তোমাকে এবরশন করতে
হয়েছে,
তুমি আমাকে কেনো চাওনি মা ?
আমি কি এতোটাই খারাপ??
;;;;; না বেবি তুমি খারাপ নও । তুমি নিষ্পাপ । পাপী হলাম
আমরা । একটি মাকে যদি এ কারনে ১০০% দায়ী করা
হয় ভুল হবে, এর পেছনে আরো জড়িত আছে
আমাদের সমাজের কিছু অসাধু ডাক্তার, মহিলা ধাত্রী,
অখ্যাত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলি পাশাপাশি সেই সব
অভিবাবক যারা তাদের ছেলে - মেয়েদের অবাধ
স্বাধীনতায় ছেড়ে দিয়েছে, ফলে অবাধ যৌনতায়
লিপ্ত হয়ে সমাজে লোক লজ্জার ভয়ে গর্ভপাত
করছে । যাদের হাতে প্রতিনিয়ত খুন হচ্ছে মানব
শিশু । দেশের কেউ খুন করে ধরা পড়ে খুনী
প্রমানিত হলে ফাঁসির রায় হয়, ক্ষেত্রবিশেষে ফাঁসি
কার্যকরও হয় । কিন্তু এই খুনীদের কি হবে ?
এরাতো নিঃশব্দ ঘাতক ।
তবে "হ্যা" দুনিয়ার আদালত এদের সাজা দিতে না
পারলেও, আখিরাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের
আদালতে এরা কঠিনভাবে পাকড়াও হবে । সেদিন
কোনো উকিল থাকবেনা, খুন হওয়া নিস্পাপ
সন্তানটিকে আল্লাহ যখন জীবিত করে সাক্ষী
হিসেবে দাড় করাবেন, যমীন সাক্ষী দেবে,
খুনী পিতা - মাতার নিজের অঙ্গ- প্রত্তঙ্গও সেদিন
সাক্ষ্য দেবে, কেরামান - কাতেবীন
ফেরেশতাদ্বয় যেদিন লিখিত আমালনামা প্রমান
হিসেবে পেশ করবে, সেদিন মহাপ্রভুর ন্যায় - নিষ্ঠ
সুবিচার থেকে তারা নিস্তার পাবে কিভাবে ?
_______The End_______K

http:/alamgir.rahman.9
847
https://papry99.blogspot.com/


স্যার একটা কথা কমু?

স্যার একটা কথা কমু?

  ___ স্যার একটা কথা কমু? ____
https://mobile.facebook.com/alamgir.rahman.9847
https://papry99.blogspot.com/
:
.-- স্যার একটা কথা কমু?
-কি বল?
-আইজ আমারে সারে ১২টায় ছুটি দেবেন?
-কেন? কি করবা?
-বাসায় গিয়া ভাত খামু, পেটে খুব ক্ষিধা লাগছে।
-কেন সকালে খেয়ে আসোনি?
-জ্বি না।
-কেন?
-তরকারি নাই। আর লবণ দিয়া ভাত খাইতে পারি না।
তাই খাইতে পারি নাই।
কথাটা শুনতেই বুকের মধ্যে কেমন যেন
লাগলো স্যারের?
-রাতে কি খেয়েছো?
-গরম ভাতে পানি দিয়া ডাল মনে করে ভাত।
-এখন কি দিয়ে খাবে?
-মায় কইছে ইস্কুল ছুটির পর গেলে কচু
রাইন্ধা রাখব। হেইডা দিয়া মজা কইরা ভাত খামু।
মায় খুব মজা কইরা কচু রানবার পারে।
কখন যে চোখটা ঝাপসা হয়ে আসল বুঝতে পারিনি।
একদিন তোমার মায়ের হাতের রান্না করা কচু
খেয়ে আসব। নিবা তোমার বাসায়?
যাইবেন স্যার সত্য?
হ্যাঁ যাব। যাও বাসায় গিয়ে পেট ভরে ভাত খাও।
মুখে পৃথিবী জয় করা হাসি নিয়ে বই হাতে নিয়ে তার
চলে যাওয়ার দিকে মন্ত্র মুগ্ধের মত তাকিয়ে রইলাম।
http:/alamgir.rahman.9
847
https://papry99.blogspot.com
তরকারির জন্য ভাত খেতে পারছে না। অথচ
আমাদের এই সমাজে কত মানুষ আছে যাদের
খাবারের মেনুতে কত আইটেম থাকে। যা তারা
খেয়ে শেষ করতে পারে
না। উচ্ছিষ্ট অংশ চলে যায় ডাস্টবিনে। এমন অনেক
বাবা মা আছেন যারা ছেলেকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে
পড়ান। গাড়ি করে নিয়ে যান। ছেলের কত আবদার!
সব পূরণ করতে ব্যস্ত। অথচ রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষ
গুলোর দিকে ফিরেও তাকান না। তাকাবেন কেন??
তাকালেই তো ঘাড়ে এসে পড়বে। আমরা তো
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। হাজার টাকার বডি স্প্রে
গায়ে দিয়ে ঘুরে
বেড়াই। ঈদ আসলে ব্যস্ত হয়ে পড়ি শপিং নামক
টাকা উড়ানোর খেলায়। কেউ পাখি,কেউ কিরণমালা,
কেউ শীলা কি জাওয়ানি নামক উদ্ভট সব পোশাক
কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু বুঝতে চাই না এই
বাইরের পোশাক গুলোতে আমাকে কি মানাচ্ছে?
অথচ একটা গরীব লোক এসে বলছে-দুইটা টাকা
দেন। তখন বলি-ভাংতি নাই। মাফ কর। গার্লফ্রেন্ডকে
নিয়ে চাইনিজ এ
অনেক-ই যায়। কত টাকা খরচ হয় হিসাব রাখে না অথচ
গরীব রিক্সাচালক যখন বলে-পাঁচটা টাকা বাড়াইয়া দেন।
তখন তার গায়ে হাত তুলতে দ্বিধাবোধ করে না। ঐ
গরীব লোক গুলোর অপরাধ কি?
অপরাধ একটাই যে সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে গরীবের
ঘরে জন্ম দিয়েছেন। আর আপনাকে সোনার
চামচ মুখে দিয়ে কোন ধনী বাবার ঘরে। আমি
ছেলে মেয়ে কাউকে উদ্দেশ্য করে এই
পোষ্টটা দেইনি। আমি আমাকেই এখানে কল্পনা
করছি,,
"এটার কারণ শুধু আমাদের ঘুমন্ত
বিবেকটাকে একটু জাগ্রত করার জন্য"
#_পোষ্টটা_পরে_কিছু_বুঝে_থাকলে_শেয়ার_করতে_পারেন .....???
_______The End_______K

http:/alamgir.rahman.9
847
https://papry99.blogspot.com/


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলমান ছাত্রী ফজিলাতুন্নেসা জোহার ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকীত ে শ্রদ্ধাঞ্জলি --------------------------

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলমান ছাত্রী
ফজিলাতুন্নেসা জোহার ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকীত
ে শ্রদ্ধাঞ্জলি
--------------------------



ঢাকা ইডেন কলেজের অধ্যক্ষা এবং ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলমান ছাত্রী
ফজিলতুন্নেসা জোহা। বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে
মুসলিম মেয়েদের মধ্যে ফজিলতুন্নেসা হলেন
প্রথম স্নাতক ডিগ্রীধারী। তাঁর আগে আর কোন
মুসলমান মেয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করতে
পারেনি। অসম্ভব্ মেধার অধিকারী ফজিলতুন্নেসা
শুধু অসামান্য সুন্দরীই ছিলেন না তি্নি ছিলেন
অঙ্কের এম এ এবং একজন উচুঁদরের বাক্পটু
মেয়ে। ১৯২৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত
বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেনিতে প্রথম স্থান লাভ
করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। বাংলার
রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থাকে ভ্রুকুটি দেখিয়ে
অসম সাহস ও উচ্চ শিক্ষা লাভের প্রবল আকাংখায়
বোরকা ছাড়া বহুবিধ অত্যাচার সহ্য করে উওরসুরী
মুসলিম মেয়েদের জন্য উচ্চশিক্ষার পথ সুগম
করেন ফজিলতুন্নেসা। নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি
সম্পর্কে সওগাতসহ অনেক পত্রিকায় তার বিভিন্ন
প্রবন্ধ, গল্প প্রকাশিত হয়। আমাদের ব্যার্থতা আমরা
এই গুণী নারীকে যথাযোগ্য সম্মান দিতে পারিনি।
বর্তমান প্রজন্মও তাকে খুব একটা জানেনা এমনকি
বাংলাদেশেও ফজিলতুন্নেসাকে স্মরন করে না।
১৯৭৬ সালের আজকের দিনে ফজিলতুন্নেসা
জোহার জীবনের ইতি ঘটে। আজ এই মহিয়সী
নারীর ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রথম মুসলমান ছাত্রী ফজিলতুন্নেসা জোহার
মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ফজিলাতুন্নেসা ১৯০৫ সালে (জন্মতারিখ জানা যায়নি)
ময়মনসিংহ জেলার করটিয়ার ‘কুমল্লীনামদার’ গ্রামে
জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ওয়াহেদ আলী
খাঁ। করোটিয়ার জমিদার বাড়িতে সামান্য একটি চাকরি
করতেন ওয়াহেদ আলী খাঁ। ফজিলতুন্নেসার শৈশব
আর কৈশোর কেটেছে গ্রামে। গ্রামের
স্কুলেই তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু। ৬ বছর বয়সে
ফজিলতুন্নেসা করটিয়ার প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন।
শৈশব হতেই ফজিলাতুন্নেসা লেখাপড়ায় আগ্রহী এবং
মেধাবী ছিলেন। তিনি প্রতিটি ক্লাসে প্রথম
হতেন। স্কুলের বাৎসরিক পরীক্ষায় ভালো
ফলাফল দেখে পারিবারিক অস্বচ্ছলতা থাকা সত্বেও
তিনি তাঁর মেয়েকে শিক্ষার পথে এগিয়ে দেন।
নিম্ন প্রাইমারি, উচ্চ প্রাইমারি ও মাইনর পাস শেষে
সামাজিক ও পারিবারিক বাধা অতিক্রম করে ১৯১৭ সালে
তিনি ফজিলতুন্নেসাকে ঢাকা নিয়ে আসেন এবং সে
সময়ের একমাএ সরকারী বালিকা বিদ্যালয় 'ইডেন
স্কুলে' ভর্তি করে দেন। কঠোর অধ্যবসায় ও
পরিশ্রমের পুরস্কার তিনি পান ১৯২১ সালে
ম্যাট্রিকুলেশন(বর্তমান এসএসসি) পরীক্ষায় ঢাকা
বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে এবং মাসিক ১৫ টাকা
হারে বৃত্তি পান। তখন থেকে লোকের মুখে
তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ১৯২৩ সালে ইডেন
কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন এবং শিক্ষাবৃত্তি
লাভ করেন। অতঃপর কলকাতার বেথুন কলেজে বিএ
পড়ার জন্য যান। এই কলেজে তখন তিনিই ছিলেন
একমাএ মুসলিম ছাএী। ১৯২৫ সালে ডিসটিংশান সহ বিএ
পাশ করেন ফজিলাতুন্নেসা। তাঁর আগে কোন
মুসলিম মেয়ে এই বিরল সম্মানের অধিকারী হয়নি।
বিএ পাশ করে তিনি ঢাকা ফিরে আসেন। এর পরে তাঁর
পিতা তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিতে মাস্টার্স
ক্লাশে ভর্তি করে দেন। তিনি ছিলেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাএী। কিন্তু এখানে
তিনি কঠিন পরীক্ষায় পড়লেন কারন তখন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষার পরিবেশ ছিলনা।
এক্ষেএেও ফজিলতুন্নেসা ছিলেন সফল, তিনি
সতীর্থদের সাথে গড়ে তুলেন বন্ধত্বময়
সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক। ১৯২৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে অঙ্কশাস্ত্রে মিশ্র বিভাগে এমএ
পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান দখল করেন।
এমএ পাশ করার পর ১৯২৮ সালে কিছুদিন তিনি ঢাকার
ইডেন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ১৯২৮ সালের
সেপ্টেম্বর মাসে স্টেট স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি
ডিগ্রির জন্য ফজিালতুন্নেসা ইংল্যান্ড যান। উল্লেখ্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে একজন
মেয়েকে বিলেত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানালে
তিনি নিজ চেষ্টায় 'ষ্টেটস স্কলারশীপ' যোগাড়
করেন। এ ব্যাপারে সওগাত সম্পাদক নাসির উদ্দিন ও
খান বাহাদুর আবদুল লতিফ তাঁকে সাহায্য-সহযোগিতা
করেন। ফলে তাঁর বিলেত যাওয়ার পথ সুগম হয়।
কিন্তু বাবার অসুখের খবর পেয়ে ১৯৩০ সালের
সেপ্টেম্বর মাসে কোর্স শেষ না করেই তিনি
দেশে ফিরে আসেন। এরপর আর তাঁর বিলেত
যাওয়া হয়নি। লন্ডন থেকে ফিরে ১৯৩০ সালে তিনি
কলকাতায় প্রথমে স্কুল ইন্সপেক্টরের চাকুরিতে
যোগদান এবং পরে কলকাতার বেথুন কলেজে
শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি এ কলেজের গণিত
বিভাগের প্রধান এবং একই সঙ্গে কলেজের
উপাধ্যক্ষা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৭
সালে দেশ বিভাগের পর তিনি বেথুন কলেজের
চাকরি ছেড়ে স্বেচ্ছায় ঢাকা চলে আসেন এবং
ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হন।
বাংলাদেশে তিনিই প্রথম মহিলা অধ্যক্ষ। ১৯৪৮
থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত তিনি ইডেন কলেজের
অধ্যক্ষার পদে আসীন ছিলেন। বেগম
ফজিলাতুন্নেছার অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টায় বিজ্ঞান
ও বাণিজ্যিক বিভাগসহ ইডেন কলেজ ডিগ্রি পর্যায়ে
উন্নীত হয়। কিন্তু প্রশাসনিক কোন্দলের জের
ধরে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই তাঁকে বাধ্যতামূলক
আবসর নিতে হয়।
ব্যক্তিগত জীবনে খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ্র পুত্র
প্রথম বাঙালি সলিসিটর জনাব শামসুজ্জোহার সাথে
পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন ফজিলাতুন্নেসা। নাম হয়
ফজিলাতুন্নেসা জোহা। বিলেতে থাকাকালে তার
সাথে জনাব শামসুজ্জোহার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়।
পরবর্তীতে প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁর মধ্যস্থতায় জনাব
জোহার সাথে ফজিলতুন্নেসার বিয়ে হয়। এখানে
উল্লেখ্য আমাদের জাতীয় কবি, প্রেমের কবি
কাজী নজরুল ইসলাম বেগম ফজিলাতুন্নেছার কাছে
প্রেম নিবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হন।
ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে নজরুলের পরিচয় ঘটে
১৯২৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন বর্ধমান
হাউস হোস্টেলের হাউস টিউটর কাজী মোতাহার
হোসেনের মাধ্যমে। ওই বছররে ২৫
ফেব্রুয়ারিখে তারিখে বন্ধু মোতাহারকে লেখা
চিঠিতে কবি লিখছেন, ' আমার জীবনের
সবচেয়ে বড় অভাব ছিল sadness-এর। কিছুতেই
sad হতে পারছিলাম না। কেবল ভেসে বেড়াচ্ছিলাম।
কিন্তু আজ ডুবেছি বন্ধু! একেবারে নাগালের
অতলতায়।’ কবি তার সমস্ত কবিতা ও গানের
সর্বাপেক্ষা উত্তমগুলির সংকলন সঞ্চিতা তার নামে
উৎসর্গ করার অনুমতি চেয়েও পান নি। আমরা জানি,
সঞ্চিতা শেষাবধি রবীন্দ্রনাথের নামে
উৎসর্গীকৃত। অর্থাৎ গণিতের এই ছাত্রীটি
নজরুলকে উৎসর্গের অনুমতি দেন নাই। এ কথা
সত্য যে কবি প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন যা জানা যায়
কাজী মোতাহার হোসেনকে লেখা কবির এক
পত্রে। প্রত্যাখ্যাত কবি কাজী মোতাহার
হোসেনকে লিখেন, "গণিতজ্ঞ লোকেরা
বড্ডো কঠোর নিষ্ঠুর হয়… ওদের কেবলই
intellect, heart নেই। আমাদের যেমন কেবল
heart, intellect নেই। একেবারে যারে বলে ‘সিলি
ফুল’। শেষমেশ ফজিলাতুন্নেসাকে নিয়ে তৈরি
সমস্ত অভিমান কবি ঝেড়েছেন গণিতের উপর।
কবির ভাষায় ‘কোনো নারী–সুন্দরের উপাসিকা
নারী–কোনো অঙ্কশাস্ত্রীর কবলে
পড়েছে, এ আমি সইতে পারি নে। নারী হবে
সুন্দরের অঙ্কলক্ষী, সে অঙ্কশাস্ত্রের ভাঁড়ার
রক্ষী হবে কেন?’ অপর একটি চিঠিতে কবির
উতলাভাব আরও উতলা হয়ে পড়েছে, ‘আমার
এতদিনে ভারী ইচ্ছে করছে অঙ্ক শিখতে।…আমি
যদি বিএ-টা পাশ করে রাখতাম, তাহলে দেখিয়ে দিতাম
যে, এম. এ-তে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট কবিও হতে
পারে ইচ্ছে করলে।’ তার পরেও ফজিলাতুন্নেসার
প্রতি তার ভালোবাসা মরে যায়নি। "তাই নজরুল তার
বন্ধুকে লিখেছেন. যেদিন আমি ঐ দূর তারার
দেশে চলে যাব–সেদিন তাকে বলো এই চিঠি
দেখিয়ে–সে যেন দুটি ফোঁটা অশ্রু তর্পণ দেয়
শুধু আমার নামে।
সে যাই হোক। ফজিলাতুন্নেসা জীবনের শেষ
দিনগুলো কাটিয়েছেন নিঃসঙ্গ নির্জনে। অতঃপর
কালের অমোঘ নিয়মে ১৯৭৭ সালে ২১
অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন এই বিদুষী
নারী। তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে জাহাঙ্গীরনগর
বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৭ সালে ফজিলাতুন্নেছার নামে হল
নির্মাণ করা হয়। আজ এই মহিয়সী নারীর ৪১তম
মৃত্যুবার্ষিকী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলমান
ছাত্রী মহীয়সী নারী ফজিলতুন্নেসা জোহার
মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
[সংগৃহীত]